ব্যবসা করতে চান? আপনার ব্যবসায় টাকা দেবে সরকার। কিভাবে আবেদন করবেন MSME Loan এর জন্য? কি কি ডকুমেন্ট লাগবে? বিস্তারিত জেনে নিন। ভারতবর্ষের জনসংখ্যা যত বাড়ছে, তত বাড়ছে বেকারত্ব। সারা দেশ জুড়ে লাখ লাখ যুবক যুবতি কাজ না পেয়ে কার্যত বেকার অবস্থায় রয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেকারত্ব আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। বর্তমানে দেশের যেকোন নাগরিক মাইক্রো, স্মল, মিডিয়াম, বিজনেস করতে পারেন। সেক্ষেত্রে সেই ব্যবসার টাকা যোগান দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। আপনি আবেদন করতে পারেন কেন্দ্রীয় সরকারি লোন প্রকল্পে। আপনার প্রয়োজন মতো ব্যবসায় টাকা দেবে সরকার।
দেশে বেকার সমস্যা কমাতে কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। বহু যুবক-যুবতী বর্তমানে লোন নিয়ে নিজেদের বিজনেস শুরু করছে। একটা ব্যবসা শুরু করতে গেলে যে পুঁজির দরকার হয়, তা অনেক সময়েই থাকে না। তখন যেটা করণীয়, ঋণ নিয়ে নতুন একটি ব্যবসা শুরু করা। প্রধানত ঋণ নিতে গেলে আমরা সরকারি অথবা বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা নিয়ে থাকি। অনেক সময় ব্যক্তিবিশেষ এর থেকেও পার্সোনাল লোন নেওয়া যায়। কিন্তু সেই লোন শোধ করতে গেলে যে চড়া হারে সুদ দিতে হয়, তাতে কালঘাম ছোটে জনসাধারণের।
তাই নতুন ব্যবসা শুরু করতে হলে, সরকারের থেকে লোন নেওয়া ভালো। আমাদের ভারত সরকার দেশের যুবক-যুবতীদের নতুন ব্যবসা শুরু করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য ঋণ দিয়ে থাকে। এখনো পর্যন্ত অনেকেই সরকারি তরফে ঋণ নিয়ে তাদের ব্যবসা শুরু করেছেন। আজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। আপনিও যদি নিজের ব্যবসা শুরু করতে চান, তাহলে আবেদন করতে পারেন সরকারি ঋণ প্রকল্পে। কেন্দ্রীয় সরকার MSME LOAN বা মাইক্রো স্মল মিডিয়াম বিজনেসের জন্য লোন প্রদান করে থাকে।
MSME LOAN SCHEME 2024 | MSME লোন কি?
‘এম এস এম ই’ এই লোনের পুরো কথা মাইক্রো, স্মল, মিডিয়াম। এই লোন প্রকল্প সারা দেশের সমস্ত মাইক্রো, স্মল ও মিডিয়াম ব্যবসা গুলিকে টাকা প্রদান করে থাকে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে যারা সরকারের থেকে সাহায্য চান, তাদের কেন্দ্র ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা প্রদান করে। এই ভারত সরকার ২০০৬ সালে MSME Act পাস করে সমস্ত এই ধরনের শিল্প গুলিকে এক সারিতে নিয়ে আসে। দেশের শিল্পের গতি আনা জরুরী আর অর্থনৈতিক স্বার্থে। আর শিল্পের জন্য যেটা প্রয়োজন তা হলো বিনিয়োগ। ভারত যেহেতু শ্রম নিবিড় দেশ, এই দেশের অর্থনৈতিক শিরদাঁড়া এই এমএসএমই (MSME)। ভারতবর্ষের জনসংখ্যার প্রায় ১২ কোটি মানুষ এই ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের দ্বারা জড়িত। সারা দেশ থেকে যে পরিমাণ রপ্তানি হয়, তার ৪৫ শতাংশ করে ছোট ও মাঝারি সংস্থা।
MSME LOAN এর সুবিধাগুলি কি কি?
১) MSME লোনের ক্ষেত্রে আবেদন করার কিছু সময়ের মধ্যেই ঋণের টাকা পাওয়া যায়। অর্থাৎ এখানে ইনস্ট্যান্ট লোন দেওয়া হয়।
২) এই লোনের ক্ষেত্রে সুদের হার অত্যন্ত কম। যার কারণে উপকৃত হন নতুন ব্যবসা শুরু করা যুবক যুবতীরা।
৩) এই লোনের পরিশোধ করার মেয়াদ নমনীয়। একজন ব্যক্তি ১২ থেকে ৬০ মাসের মধ্যে লোনের টাকা পরিশোধ করতে পারেন।
৪) এই লোন নিতে গেলে আপনাকে কোন জামানত বা সম্পত্তি কোল্যাটেরাল হিসেবে রাখার প্রয়োজন পড়ে না।
৫) আপনি খুব সহজেই অনলাইনে এই লোনের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।
৬) কোনো স্বীকৃত অভিজাত প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগপতিরা এখানে আবেদন করলে লোনের উপর বিশেষ কিছু অফার দেওয়া হয়।
MSME LOAN এর আবেদন যোগ্যতা কি কি?
১) এই লোনের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সীরা।
২) এই লোনের আবেদনকারীকে অবশ্যই নিজের একটি কোম্পানি থাকতে হবে এবং সেটি চালাতে হবে। সেটা ট্রেডিং, ম্যানুফ্যাকচারিং বা কোনো সার্ভিসের সঙ্গে যুক্ত কোম্পানি হতে পারে।
৩) এই লোনের আবেদনকারীকে যে কোনো ব্যবসায় নূন্যতম ৫ বছরের অভিজ্ঞতা এবং তিন বছরের সংশ্লিষ্ট ব্যবসার অভিজ্ঞতা থাকা বাঞ্ছনীয়।
৪) আবেদনকারীর বার্ষিক টার্ন ওভার বা লাভ হতে হবে অন্ততপক্ষে ২ লক্ষ টাকা।
৫) এই লোনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে Udayam পোর্টালে অবশ্যই ব্যবসার নাম এমএসএমই শংসাপত্রে নথিভুক্ত করে রাখতে হবে।
MSME লোনের জন্য আবেদন জানাবেন কিভাবে
১) এই লোনের জন্য আবেদন জানাতে হলে আপনাকে প্রথমে ভিজিট করতে হবে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে।
২) তারপর সেখান থেকে তালিকা থেকে নির্বাচন করে নিন MSME LOAN।
৩) এরপর আবেদনপত্র স্ক্রিনে দেখতে পাবেন, সেটি সমস্ত তথ্য দিয়ে নির্ভুলভাবে পূরণ করে নিন।
৪) আবেদনপত্র নির্ভুলভাবে পূরণ হলে সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করে দিন।
৫) এরপর MSME আপনার সঙ্গে লোনের চুক্তি করবে। মন দিয়ে পড়ে নিন লোনের চুক্তিগুলি। তারপর Terms And Conditions এ Agree করুন।
৬) এরপর আপনাকে চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হবে।
৭) আবেদন সম্পন্ন হবে। এরপর লোনের জন্য অপেক্ষা করুন। মোটামুটি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লোনের টাকা ক্রেডিট হয়ে যাবে।